নিজস্ব প্রতিবেদক,
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ভূরারঘাট এম.ইউ. বহুমুখী ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসায় দীর্ঘদিন ধরে এমপিওভুক্তি জটিলতা ও বেতন-ভাতা বঞ্চনার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ মো. সাখাওয়াত হোসেন। তিনি সোমবার (১৬ জুন) সুন্দরগঞ্জ পৌরসভার বাহিরগোলা মসজিদসংলগ্ন নিজস্ব কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন।
উপাধ্যক্ষ মো. সাখাওয়াত হোসেন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “আমি ২০১০ সাল থেকে এই মাদ্রাসায় প্রভাষক (আরবি) পদে কর্মরত আছি। পরবর্তীতে উপাধ্যক্ষ এবং ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছি। কিন্তু ২০১৮ সালের জুলাই থেকে আমি এবং আরও চারজন শিক্ষক এমপিওভুক্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। এর মধ্যে মোছা. মোবাশ্বেরা মাহমুদা পরে অন্যত্র চাকরি গ্রহণ করেন।”
তিনি অভিযোগ করেন, তৎকালীন সংসদ সদস্য মনজুরুল ইসলাম লিটনের হস্তক্ষেপে অযোগ্য ব্যক্তিদের নিয়োগ দিয়ে প্রকৃত শিক্ষকরা এমপিও তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন। “মাদ্রাসায় ভুয়া প্রভাষক নিয়োগ দিয়ে আমাদের এমপিও কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত উপজেলা তাতী লীগের সভাপতি মো. ইউনুস আলী এবং মোছা. নিলুফা ইয়াসমিন,” উল্লেখ করেন তিনি।
উপাধ্যক্ষ আরও জানান, “আমরা ৮৮০৮/২১ ও ৯০০৮/২১ নম্বর হাইকোর্ট রিট দায়ের করেছি। আদালত আমাদের পক্ষে রায় দিলেও আজ পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন হয়নি। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ২০১৫ সালের প্রতিবেদন মোছা. নিলুফা ইয়াসমিনের চাকরিকে অবৈধ ঘোষণা করেও তিনি এখনও বহাল তবিয়তে রয়েছেন। মো. ইউনুস আলী সরকার থেকে নিয়মিত বেতন-ভাতা পাচ্ছেন।”
সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর ও ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত এবং যথাযথ তদন্তের আহ্বান জানান। ভুয়া নিয়োগ বাতিল, দোষীদের শাস্তি এবং বৈধ শিক্ষকদের বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধের জোর দাবি জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সহকারী শিক্ষক দিল আফরোজা বেগম, আতিকুর রহমান, প্রভাষক হারুন অর রশিদ ও প্রভাষক আলাউদ্দীন মজুমদার।
স্থানীয়রা বলছেন, ভূরারঘাট মাদ্রাসায় দীর্ঘদিন ধরে এমপিওভুক্তি নিয়ে জটিলতা ও প্রশাসনিক অনিয়ম বিদ্যমান। তারা আশা করেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত হস্তক্ষেপ করে শিক্ষকদের অধিকার নিশ্চিত করবেন।