এমডি রেজওয়ান আলী-বিরামপুর উপজেলা প্রতিনিধিঃ
দিনাজপুরের বিরামপুরে ১লা মে ২০২৫ বৃহস্পতিবার বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে মহান মে দিবস তথা আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস পালিত হয়েছে। আজ সকাল ৯ টা ৩০ ঘটিকর সময় বিরামপুর শহরের ঢাকা মোড় থেকে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের যৌথ অংশ গ্রহণে এক বিশাল র্যালী বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদিক্ষণ করেন। র্যালী শেষে উপজেলার সকল শ্রমিক সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত বিরামপুর শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ব্যানারে ঢাকা মোড় গোলচত্তরে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিরামপুর অটোবাইক মালিক-চালক সমবায় সমিতির সভাপতি এমদাদুল হকের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। দিনাজপুর জেলা মটর পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের উপজেলা স্ট্যান্ড কমিটির সম্পাদক ও শ্রমিক ঐক্য পরিষদের
নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন,
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুজহাত তাসনীম আওন,থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মমতাজুল হক,বিরামপুর প্রেসক্লাবের আহবায়ক শাহ আলম মন্ডল,দিনাজপুর জেলা মটর পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের উপজেলা স্ট্যান্ড কমিটির সভাপতি বাবুল হোসেন বাবুল্লা,পৌর রিক্সা-ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের দোকান কর্মচারী শ্রমিক ইউনিয়ন,উপজেলা ইমারত নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়নের দর্জি কারিগর সমিতির সভাপতি সানোয়ার হোসেনন নেতৃবৃন্দ সহ প্রমূখ গন।শতাব্দী পেরিয়ে আসা মে দিবসের বার্তা আজও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক,বিশেষত বাংলাদেশের মতো শ্রমনির্ভর অর্থনীতিতে,যেখানে শ্রমিক শ্রেণি আজও নানাবিধ বঞ্চনার মুখে রয়েছে। পহেলা মে দিবস সরকারি ছুটি’কিংবা ‘শ্রমিক দিবস’হিসেবে জানেন। তবে এর পেছনে রয়েছে এক রক্তাক্ত ইতিহাস,দীর্ঘ সংগ্রাম ও বৈপ্লবিক চেতনা। এই দিবসটি কেবল একটি ছুটি নয়,বরং শ্রমজীবী মানুষের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার এক আন্তর্জাতিক প্রতীক। রক্ত দিয়ে অর্জিত অধিকার ১৮৮৬ সালের ১ মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের হাজার হাজার শ্রমিক কাজ বন্ধ করে পথে নেমেছিলেন। তাঁদের একটাই দাবি ছিল— ৮ ঘণ্টা কাজের নিয়ম প্রতিষ্ঠা করা। তখনকার দিনে শ্রমিকদের প্রতিদিন ১২–১৬ ঘণ্টা কাজ করতে হতো,বিনা নিরাপত্তা,অপ্রতুল মজুরি ও মানবেতর জিবীন যাপন করত। ৪ মে ১৮৮৬,শিকাগোর হেইমারকেট স্কয়ারে চলছিল শ্রমিক সমাবেশ। এক অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি পুলিশের দিকে বোমা ছুঁড়লে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ গুলি চালায়,এতে অসংখ্য শ্রমিক নিহত হন। আটজন শ্রমিক নেতাকে গ্রেফতার করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়,যাঁদের অনেকে ছিলেন নির্দোষ। এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় সারা বিশ্বে শ্রমিকদের মধ্যে গভীর সহানুভূতি ও আন্দোলনের ঢেউ ছড়িয়ে পড়ে। বাস্তব চিত্র ও চ্যালেঞ্জ হিসাবে
অধিকাংশ শ্রমিক এখনও ৮ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন (বিশেষ করে গার্মেন্টস ও নির্মাণ খাতে)। ন্যায্য মজুরি ও নিরাপদ কর্মপরিবেশের অভাব, শ্রমিক মৃত্যু একটি নিয়মিত সংবাদ।লিখিত চুক্তি,মাতৃত্বকালীন ছুটি, মেডিকেল সাপোর্ট ইত্যাদি অধিকাংশ ক্ষেত্রেই উপেক্ষিত। নারী শ্রমিকদের প্রতি বৈষম্য ও হয়রানি,যা প্রায়শই প্রচারবিমুখ নিত্যদিনের চিত্র। মে দিবস শুধুই অতীত স্মরণ নয়
আজকের পৃথিবীতে অনেক কিছুই বদলেছে। পাশাপাশি শ্রমিকদের নায্য দাবী আদায় ও কাজের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরির জন্য শ্রমিক সংগঠনগুলোকে জোরদার ভূমিকা রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের উপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন। এ সময় বিরামপুর উপজেলার সকল প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক গন উপস্থিত ছিলেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ আতাউর রহমান মুকুল
What's App: +8801710-489904 E-mail: [email protected]