দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার খাজাপুর একরামিয়া ফাযিল (স্নাতক) মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক (গণিত) মো. রশিদুল ইসলাম কে মাদ্রাসা চলাকালীন সময়ে মারধর ও লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে ঘন্টাব্যাপি মানববন্ধন ও পরীক্ষা বর্জন করেছে ছাত্র-ছাত্রী শিক্ষক কর্মচারীরা। সোমবার (৫ জুন) সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত মাদ্রাসার সম্মুখ সড়কে শিক্ষক লাঞ্ছিতকারী উশৃঙ্খল যুবকদের বিচার দাবিতে ঘন্টাব্যাপি এই মানববন্ধন করেন তারা।
জানা যায়, তুচ্ছ ঘটনার মিমাংসা হওয়ার ৩ দিন পর রোববার (৪ জুন) মাদ্রাসায় ঢুকে স্থানীয় উশৃঙ্খল ২০-২৫জন যুবক ওই শিক্ষকের ওপর হামলা করেন। পরে অন্যান্য শিক্ষকরা এসে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে প্রেরণ করেন। বর্তমানে তিনি দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এদিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ঢুকে শিক্ষককে মারধরের ঘটনায় ফুসে উঠেছে মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও শিক্ষক মহল।
সরেজমিনে সোমবার সকাল ১০টায় দেখা যায়, উপজেলার এলুয়ারি ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন খাজাপুর একরামিয়া ফাযিল স্নাতক মাদ্রাসায় মাধ্যমিকের অর্ধবার্ষিকী পরীক্ষা ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের ক্লাস বর্জন করে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মচারীরা মানববন্ধন করছেন। ওই মানববন্ধন থেকে শিক্ষকরা এই ন্যাক্কার জনক ঘটনার সুষ্ঠু বিচার না হওয়া পর্যন্ত উচ্চ মাধ্যামিক শ্রেণির ক্লাস ও মাধ্যমিক শ্রেণির অর্ধবার্ষিকী পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।এসময় আন্দোলনকারী শিক্ষকরা অভিযোগ করে বলেন, গত ২৮ মে নবম শ্রেণির এক ছাত্রীর (নাম প্রকাশ যোগ্য নয়) মুখের মাস্ক খুলতে বলেন সহকারী অধ্যাপক মো. রশিদুল ইসলাম। তুচ্ছ এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে, ওই দিনই ছাত্রীর পরিবারের পক্ষ থেকে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার (১ জুন) মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটি, অধ্যক্ষ এইচ এম মাহবুবুর রহমান ওই ছাত্রীর পরিবারের লোকজনসহ শিক্ষকরা বৈঠক করেন। এতে শিক্ষকের দোষ প্রমাণ না হলেও মাদ্রাসার সুনাম রক্ষার্থে শিক্ষক রশিদুল ইসলাম সকলের সম্মুক্ষে ওই ছাত্রী ও তার বাবার কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন। বিষয়টি সেখানেই মিমাংসা হয়। তারা বলেন, মিমাংসার তিন দিন পর রোববার (৪ জুন) ওই ছাত্রীর ভাই রমজান আলী, মৃত ওসিয়ার রহমানের ছেলে আল আমীনসহ ২০-২৫ জনের একটি দল মাদ্রাসায় প্রবেশ করে শিক্ষক কমন রুমে ঢুকে ওই শিক্ষককে এলোপাথারি মারধর করেন। এতে গুরুতর আহত হলে রশিদুল ইসলামকে প্রথমে মাদ্রাসা সংলগ্ন এলুয়াড়ী উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এবং পরে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের নিরাপত্তা নিশ্চিৎ না হওয়া পর্যন্ত মাধ্যমিক পর্যায়ের চলমান অর্ধবাষিকী পরীক্ষা ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের সব ধরনের ক্লাস বর্জন চলবে।মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এইচ এম মাহবুবুর রহমান বলেন, একটা তুচ্ছ বিষয় আমরা আলোচানা করে মিমাংসা করেছি। মিমাংসিত বিষয়ে প্রতিষ্ঠানে ঢুকে শিক্ষককে মারধর করার ঘটনার দিন আমি ঢাকায় ছিলাম। মুঠোফোনে শুনে কাজ ফেলে চলে এসেছি। বিষয়টি মাদ্রাসার সভাপতি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিল্টনকে অবগত করেছি। ম্যানেজিং কমিটির জরুরী সভা ডাকা হয়েছে। সভায় পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে।
এবিষয়ে মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিল্টন এর সাথে মুঠো ফোনে কথা বললে তিনি বলেন, ওই বিষয়টি নিয়ে মিটিংএ আছি।
সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ আতাউর রহমান মুকুল
What's App: +8801710-489904 E-mail: [email protected]